ফেসবুক পোস্ট নিয়ে ৫ ঘরে অগ্নিসংযোগ, ১৪৪ ধারা জারি

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া কেন্দ্র করে কুমিল্লার মুরাদনগরে পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের দুটি বাড়ির ৫টি ঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।  এ ঘটনার পর উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের ঘটনায় আন্দিকোট ইউনিয়নে ডাকা গণজমায়েত সভা-সমাবেশকে ঘিরে অপ্রিতীকর ঘটনার আশঙ্কায় আজ সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অভিষেক দাশ জানান, প্রশাসনের কাছে তথ্য ছিল– সোমবার আন্দিকোট ইউনিয়নে পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের দুটি বাড়ির ৫টি ঘরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘিরে গণজমায়েত সভাসমাবেশ হবে। এ ঘটনায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটনার আশঙ্কায় আন্দিকোট ইউনিয়নে সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

এর আগে রোববার বিকালে উপজেলার পূর্বধইর পূর্ব ইউপির কোরবানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ওই গ্রামে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কোরবানপুর গ্রামের শিক্ষক শংকর দেবনাথ এবং আন্দিকুট গ্রামের অনিক ভৌমিক নামে দুই ব্যক্তি তাদের ফেসবুক আইডি থেকে মহানবীকে (সা.) নিয়ে ফ্রান্সে প্রদর্শিত ব্যঙ্গচিত্রকে সমর্থন করে মন্তব্য করেন। বিষয়টি স্থানীয়দের দৃষ্টিগোচর হলে এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

শনিবার রাতে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে।

এদিকে রোববার ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার গুজবে পূর্বধইর পশ্চিম ইউপির চেয়ারম্যান বন কুমার শিবসহ ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

খবর পেয়ে রাতেই জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর ও পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।

এর পর কোরবানপুর ও আন্দিকোট গ্রামে ৪ প্লাটুন পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

কোরবানপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল খায়ের জানান, স্থানীয় একটি কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক শংকর তাদের ফেসবুক আইডি থেকে মহানবীকে (সা.) নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনকে সমর্থন করে পোস্ট ও মন্তব্য করেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

বাঙ্গরাবাজার থানার ওসি কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, থানা পুলিশ মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক শংকর দেবনাথ ও আন্দিকোট গ্রামের অনিক ভৌমিককে গ্রেফতার করেছে। ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এর পর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা অনভিপ্রেত। এ ঘটনায় আরেকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। ভাঙচুরের ভিডিও রয়েছে, তা দেখে এবং তদন্ত করে অপরাধী শনাক্ত করে আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর বলেন, একজন ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে আমি এবং পুলিশ সুপার দুজনেই ঘটনাস্থলে যাই। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর